Monday, December 23, 2024
Homeঅপরাধপার্থেনিয়াম এই গাছের বিষক্রিয়া মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

পার্থেনিয়াম এই গাছের বিষক্রিয়া মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার প্রধান সড়ক,আঞ্চলিক সড়ক বাড়ীর আঙ্গিনায় অলিতে গলিতে এ ধরনের উদ্ভিত রাস্তার দুধারে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও এটি একধরনের বিষাক্ত আগাছা।
যে আগাছা মানবদেহ ও পশু প্রাণীর বিভিন্ন ক্ষতি করে। তবুও এটি সমূলে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেই। এদিকে কৃষকরাও জানে না এর ক্ষতিকর দিক।

জানা গেছে, পার্থেনিয়ামের বৈজ্ঞানিক নাম হিস্টেরো ফোরাস। এই বিষাক্ত উদ্ভিদটি সাধারণত উচ্চতায় ১ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। পার্থেনিয়াম শাখা বিস্তারের মাধ্যমে গম্বুজ আকৃতির ঝোপ আকারের হয়। পাতা শাখাযুক্ত ত্রিভুজের মতো। নির্দিষ্ট বয়সে ফুল ফোটে। তিন থেকে চার মাস বাঁচে একটি গাছ। এই সময়ের মধ্যেই তিনবার ফুল ও বীজ দেয়। এর ফুল সাদা, গোলাকার, আঠালো এবং পিচ্ছিল হয়ে থাকে। পার্থেনিয়ামের একটি গাছ ৪ থেকে ২৫ হাজার বীজের জন্ম দিতে পারে। এই বীজ এতই ছোট যে সাধারণত গবাদি পশুর বর্জ্য, গাড়ির চাকা ও পথচারীদের জুতা-স্যান্ডেলের তলার কাদামাটি, সেচের পানি ও বাতাসের সঙ্গে এর বিস্তার ঘটে। পার্থেনিয়ামে রয়েছে টক্সিন বা বিষ, যা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই বিষাক্ত আগাছা একধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে, যা উপকারী কীটপতঙ্গ ও ফসলের ক্ষতি করে। কমিয়ে দেয় ফসলের উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশ।

আমেরিকা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা গমের সঙ্গে এই বীজ এদেশে প্রবেশ করেছে। প্রথমদিকে এর বিস্তার কম থাকলেও বর্তমানে এটি মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর বিষাক্ত রেণু বাতাসের সঙ্গে মিশে মানবদেহে প্রবেশ করে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে। পার্থেনিয়াম আগাছাযুক্ত মাঠে গবাদিপশু চরানো হলে পশুর শরীর ফুলে যায়, তীব্র জ্বর, বদহজমসহ নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। এ ছাড়াও পার্থেনিয়াম মানুষের হাতে-পায়ে লাগলে প্রাথমিক অবস্থায় হাত-পা চুলকায়, লাল হয়ে যায় এবং পরে ত্বকে ক্যানসারের সৃষ্টি করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনঘন জ্বর, অসহ্য মাথাব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারে। পার্থেনিয়ামে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিশেষ করে পরিত্যক্ত জমিতে এর বংশবিস্তার বেশি। এসব এলাকার চাষিরা জানে না এর আসল নাম কী। সবাই এটাকে আগাছা হিসেবে চিনলেও এর ক্ষতিকর দিকটি সবার অজানা। এটি মানবদেহ ও পশুর জন্য হুমকি এবং ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও অজানা।প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। ইতোমধ্যে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের জরিপ করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, পার্থেনিয়ামের বীজ নষ্ট করা কষ্টসাধ্য। তবে কীটনাশক ছিটানোর মাধ্যমে বিনষ্ট করা সম্ভব।

RELATED ARTICLES

Most Popular