ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
দুর্গামণ্ডপে সনাতন ধর্মের বেদ ও পুরাণ থেকে মন্ত্র পাঠ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও জেলা নায়েবে আমির ঝিনাইদহ ৩ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। এর পরই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে চলছে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার বাজেবামদাহ পাল পাড়ার হরিতলা দুর্গা মন্দিরে হিন্দু সাম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে এক বক্তব্যে তিনি হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থ বেদ ও পুরাণ থেকে কয়েকটি মন্ত্র পাঠ করেন তিনি। তিনি বলেন মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান, মুসলিম তার নয়ন মনি, হিন্দু তাহার প্রাণ। আজকের এই দিন আমার কাছে স্মরণীয় একদিন। সে সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের নর-নারীরা শঙ্খ ও উলুধ্বনি দিয়ে তাকে অভিবাদন জানান। এ বক্তব্যের কিছু অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনরা তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু করেন। তখন থেকে তিনি সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন। জানা যায়, এই প্রথম না প্রায় চার দশক ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াজ-মাহফিলসহ ধর্মীয় আলোচনাসভায় বক্তব্য দিয়ে আসছেন এই জামায়াত নেতা। তিনি ওই সব অনুষ্ঠানে ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গ্রন্থ বেদ, পুরাণ, বাইবেল থেকে বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত তুলে ধরে বক্তব্য দেন।
এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির আলী আজম মো. আবু বকর বলেন,অধ্যাপক মতিয়ার রহমান সাহেব বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও আলোচনাসভায় দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করেন। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে তার এই বক্তব্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কাজ করছে। আগামী দিনের জন্য সুন্দর বার্তা দিচ্ছে। তিনি ইতিমধ্যে ঝিনাইদহ-৩ আসনের মানুষের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ জানে তিনি ইসলামি বক্তা। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন দায়িত্বশীল নেতা, সনাতন ধর্মাবলম্বী সহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। শনিবার (১২ অক্টোবার) সকালে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন আমি ঝিনাইদহ-৩ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী। আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের জাতিগত নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ধর্মীয় দুর্গাপূজা উৎসব পালন করতে পারে তার জন্য কোটচাঁদপুর পৌরসভা ও এলাঙ্গী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পূজা উদযাপন কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা করতে যাই। সেখানে মানবসেবা অমুসলিমদের অধিকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও নির্বিঘ্নে তারা যেন পূজা অনুষ্ঠান পালন করতে পারে এই মর্মে তাদের আশ্বস্ত করি। ইসলাম যে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শান্তির ধর্ম এবং গোটা মানবজাতির ধর্মীয় নাগরিক মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করে তার স্বপক্ষে বিভিন্ন প্রকারের বক্তব্য প্রদানকালে বেতবরণ থেকেও কিছু শোলক পাঠ করি। তাই নিয়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক মহল প্রতিহিংসা বশতঃ আমার বক্তব্যের বিশেষ অংশ প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ বিষয়ে কিছু ভাববার বা ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ নেই। বিদায়ের সময় ধর্মাবলম্বীরা দু’হাত তুলে আমাকে অভিবাদন জানালে আমিও তাদেরকে অভিবাদন জানাই পরিশেষে সকলের দোয়া কামনা করে বিদায় নিই।