নানা ধরনের সুগন্ধি চাল উৎপাদনের জন্য দিনাজপুরের নাম রয়েছে দেশজুড়েই। জেলার উৎপাদিত ধান-চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজার জাত হয়ে থাকে।
তবে এবার ধান থেকে নয়, বাঁশের ফুল থেকে হচ্ছে চাল উৎপাদন! খেতেও সুস্বাদু।
জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ১নং এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান এলাকার বাসিন্দা সীমল রায়ের ছেলে সাঞ্জু রায় বাঁশের ফুল থেকে চাল তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
ধান থেকে উৎপাদিত চালের মতো হুবহু এই বাঁশ ফুলের চাল। ভাত, পোলাও, আটা কিংবা পায়েস সব কিছু তৈরি হচ্ছে বাঁশ ফুলের চাল থেকে। তুলনামূলক কম উৎপাদন আর চাহিদা বেশি থাকায় গ্রাহকদের চাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাঞ্জু রায়।
কথা হলে সাঞ্জু রায় জানান, স্থানীয় এক বৃদ্ধের কাছ থেকে বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদনের ধারণা পান তিনি। যুদ্ধের সময় যখন চাল কিংবা ভাত অপ্রতুল ছিল তখন স্থানীয়রা এই বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদন করে রান্না করে খেতেন। সম্প্রতি এক বৃদ্ধ সাঞ্জু রায়ের এলাকায় বাঁশ ফুল দেখে চাল উৎপাদন করার কথা বলেন তাকে। পরে তিনি চাল উৎপাদন করার পরিকল্পনা করেন।
প্রথমে বাঁশের ফুলগুলো বাঁশঝাড় থেকে সংগ্রহ করেন সাঞ্জু রায়। লম্বা হওয়ায় বাঁশের অগ্রভাগ থেকে ফুল সংগ্রহ করা বেশ কষ্টকর। সংগ্রহকৃত ফুল পানিতে ধুয়ে তারপর পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। তারপর রোদে শুকিয়ে মেশিনের সাহায্যের ছোট ছোট করে চালের মতো ভাঙানো হয়। বাঁশ ফুলের এসব চাল থেকে পোলাও, আটা, ভাত ও পায়েস রান্না করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, সাঞ্জু রায় পাশের ফুল থেকে চাল উৎপাদন করবে এটা বিশ্বাস হচ্ছিল না। পরে চাল উৎপাদন করলে কিছুটা অবাক হন তারা। চালের বিনিময়ে চাল কিংবা ৪০ টাকা কেজি ধরে বাঁশ ফুলের চাল কিনছেন তারা। পোলাও, ভাত কিংবা পায়েস অনেক সুস্বাদু বলেও জানান তারা।
বেড়ুয়া বাঁশ বা কাটা বাঁশের ফুল থেকে এসব চাল উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব বাঁশের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছর বলে জানা গেছে। ফুল প্রদানের পর এসব বাস মারা যাবে বলেও জানান স্থানীয়রা।