মোঃ মাহাবুবুর রহমান।
★প্রতিনিধি ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের বলুহর মৎস্য হ্যাচারীর রেণুপোনা উৎপাদনে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি
এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মৎস্য হ্যাচারী খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর ইউনিয়নে অবস্থিত।
১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বলুহর মৎস্য হ্যাচারী কমপ্লেক্স নামের এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। ১৯৮৬ সালে সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
রুই কাতলা, মৃগেল, গ্রাসকার্প, কমনকার্প, সিলভারকার্প, কালিবাউস, তেলাপিয়া, পুটি, বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণুপোনা উৎপাদনকারী একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করেছেন।
রেণুপোনা উৎপাদন করতে যে ধরনের শান্ত ও সুনিবিড় পরিবেশ দরকার তার সবকিছুই আছে বলুহর মৎস্য হ্যাচারীতে।
প্রতিবছর সরকার বলুহর মৎস্য হ্যাচারী থেকে একটি মোটা অংকের অর্থনৈতিক সাপোর্ট পেয়ে থাকেন যা দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধিতে ব্যাপক একটি ভুমিকা রাখে। ঝিনাইদহ জেলার মধ্যে বলুহর মৎস্য হ্যাচারী কমপ্লেক্স অবস্থিত বিধায় এ অঞ্চলের মানুষেরা এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে গর্ববোধ করেন।
ঝিনাইদহ জেলাসহ দেশের অন্যান্য জেলাতেও রেণুপোনা সরবরাহে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছেন এই প্রতিষ্ঠানটি।রেণুপোনা উৎপাদনকারী সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করা ছাড়াও সরকারি ভাবে পুরস্কার অর্জন করেছে যা ঝিনাইদহের মানুষের জন্য গর্বের বিষয়।
১০৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত বলুহর মৎস্য হ্যাচারীতে মোট পুকুর আছে ৩০টি তারমধ্যে ২৩টি পুকুর ব্যবহার উপযোগী অন্যান্য গুলো সংস্কারের অভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
যেখানে লোকবল থাকার কথা ২৭ জন সেখানে অধিকাংশই শূন্যপদ তারপরও প্রতিবছর সরকারের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে।
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা যা ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে। রেণুপোনা উৎপাদন করার কথা ১৭ কেজির উপরে তাও প্রায় পূর্ন হয়ে গেছে।
ঝিনাইদহ যশোর মাগুরা কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ফরিদপুর রাজবাড়ি সাতক্ষীরা নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৎস্যজীবী, মৎস্যচাষী ও মৎস্যখামারীদের নিকট থেকে জানা যায় এবং তারা বলেন আমরা দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য হ্যাচারীতে রেণুপোনা নিতে আসি তবে এখন যে অবস্থা দেখছেন বিগত দিনে এরকম অবস্থা ছিল না। হ্যাচারীর চারপাশে ছিল বনজঙ্গলে ভরা বর্তমান ম্যানেজার আশরাফ-উল ইসলাম যোগদান করার পর সবকিছু ঠিকঠাক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার পর এখন দেখারমত হয়েছে এবং উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। মেহেরপুর থেকে আসা মৎস্যচাষী আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ মাছ চাষ করে আসছি অনেক ম্যানেজারের সাথে কারবার করেছি তবে বর্তমান ম্যানেজারের মত ম্যানেজার পায়নি। ইনি একজন অমায়িক ভালো মানুষ আর এখানকার রেণুপোনা গুলোও খুব ভালো। বলুহর মৎস্য হ্যাচারীর ম্যানেজার আশরাফ উল ইসলাম জানান, এই হ্যাচারীটি এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম।
প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব আছে, মুলগেইট থেকে ভিতরে আসার একমাত্র চলাচলের রাস্তাটির বেহাল দশা দ্রুত মেরামত করা দরকার। অনেক পুরাতন প্রতিষ্ঠান বিধায় বেশকিছু যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেগুলোও মেরামত অথবা নতুন করে স্থাপন করতে হবে। বেশ কয়েকটি পুকুর পূর্ন খনন করতে হবে তাছাড়া বেশ কয়েকটি রুমও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে সেগুলোও মেরামত বা ভেঙে নতুন করে তৈরি করতে হবে।
তবে এতোকিছু সমস্যা থাকার পরও আমরা নিয়মিতই রেণুপোনা উৎপাদন করতে পারছি এবং মৎস্যচাষী মৎস্য খামারীদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছি।
বর্তমানে সরকারের দেওয়া লক্ষমাত্রা পূরণ করতে পারছি।