Wednesday, December 25, 2024
Homeদেশহরিণের সাথে মানুষের ব্যতিক্রমী সখ্যতা

হরিণের সাথে মানুষের ব্যতিক্রমী সখ্যতা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পোষা প্রাণীর সাথে মানুষের সখ্যতার বিষয়ে কমবেশী সবারই জানা। কিন্তু হরিণের সাথে মানুষের সখ্যতা অনেকটা হতবাক করার মত ঘটনা! শুধু তাই নয়, মানুষের মত হাটে-বাজারে চলাফেরা এবং খাবার গ্রহনেও অভ্যস্ত বিরল সেই হরিণ। বিষয়টি অবাক করার মত মনে হলেও বাস্তবে ঘটেছে তা ভোলার তজুমদ্দিনে। উপজেলার সদরের বনবিভাগের বনকর্মী মোঃ নুরুল্যাহর সাথে গড়ে গভীর সম্পর্ক। একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর মতই মেলামেশা তাদের, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে।লোকালয়ে থাকতে ভয় পেলেও এবার মানুষের সাথেই বসবাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে একটি হরিণ। নাম তার শশী। শুধু তাই নয়, মানুষের ডাকে সাড়া দেয়ার পাশাপাশি মানুষের খাবার গ্রহণেও অভ্যস্ত হরিণটি।এমনি এক হরিণের সন্ধান মিলেছে ভোলার তজুমদ্দিনে।সেখানে নুরুল্ল্যাহ নামে এক বনকর্মীর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠেছে হরিণটির। আর তাই নুরুউল্যাহর সাথেই উঠা-বসা, খেলাধুলা আর খাবার গ্রহণ চলে এক সাথেই। হরিণের সঙ্গী হরিণ হলেও দলছুট হরিণটির বন্ধু বনকর্মী নুরুউল্যাহ। যা উৎসুক জনতার নজর কেড়েছে। বিরল ভালোবাসা মন কেড়েছে তাদের।সাড়ে ৩ মাস আগে লালন পালন করায় হরিনটি অনেকটা বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মনে করছে নুরুউল্যাহ। তাই তার ডাকে সাড়া দেয়ার পাশাপাশি লোকালয়ে চলাফেরায় অভ্যস্ত হরিণ শাবকটি। ঘুরে বেড়ায় হাট-বাজারেও।নুরুল্যাহর স্নেহ-মমতায় মানব সভ্যতার সাথে নিজেকে ধীরে ধীরে খাপ খাইয়ে নিয়েছে হরিণটি। বনকর্মী নুরুউল্যাহ বলেন, হরিণ আমাকে ছাড়া কিছু বুঝে না, ডাকলে সাড়া দেয়। এক রুমে থাকতে চায়। আমার সাথে খাবারও শেয়ার করে। মানুষ যেসব খাবার খায় – ভাত, মাছ ও তরিতরকারি – সব খায় হরিনটি। তিনি বলেন, সাড়ে ৩ মাস আগে দলছুট হয়ে আসা একটি মা হরিণটি বাচ্চা প্রসব করে মানুষের ভয়ে বনে চলে যায়। পড়ে থাকে শাবকটি। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় হরিণ শাবকটিকে বনবিভাগে এনে লালন-পালন শুরু করেন তিনি। বাবা-মায়ের পরম মমতায় খাবার, গোসল করানো এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব পালন করায় গভীর সখ্যতা গড়ে উঠেছে হরিণের সাথে, যা দেখতে ভীড় জমান এলাকাবাসী।এলাকাবাসী বলছেন, বনকর্মীর সাথে হরিণের এমন সখ্যতা সত্যিই বিরল। অনেকেই এমন ভিডিও ও ছবি ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছেন, ছড়িয়ে দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যা ভাইরাল হয়ে উঠেছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক হলে হরিণটিকে বনে অবমুক্ত করা হবে জানান সংশ্লিষ্টরা।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বনবিভাগের জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর সব প্রানী একই, যারা ভালোবাসল পেলে পোষ মেনে যায়। এমনই হয়েছে হরিণের বেলায়। মানুষের খাদ্যগ্রহনের ব্যাপারে তিনি বলেন, যেহেতু শিশুকাল থেকে মানুষের খাবার খাওয়ানো হয়েছে। সেজন্য অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তাই এসব খাবার গ্রহণ করছে।এদিকে হরিণের সাথে মানুষের এমন বিরল সখ্যতা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর হরিণ ও নুরুউল্যাহককে দেখতে যেমনি মানুষের ভীড় পড়ছে, তেমনি অনুকরণীয় বলে মন্তব্য এলাকাবাসীর।

RELATED ARTICLES

Most Popular