Tuesday, December 24, 2024
Homeঅপরাধসাঘাটার ভরত খালী রেলওয়ে স্টেশন অপরাধের আখড়া

সাঘাটার ভরত খালী রেলওয়ে স্টেশন অপরাধের আখড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক :

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা ভরত খালী রেলওয়ে স্টেশনে দীর্ঘদিন যাবৎ রেল গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকা ও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন অপরাধে আখড়ায় পরিণত হয়ে উঠেছে।

সেখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং সহ বিভিন্ন অপরাধী মহলের কেন্দ্র বিন্দু। ভরত খালী রেলওয়ে স্টেশন, ব্রিটিশ আমলে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষের ট্রেনে যাতায়াত সহজ করার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল। এ স্টেশনটির পাশেই অবস্থিত ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদকে ঘিরে গড়ে ওঠা তিস্তামুখ ঘাট যা সচল ছিল নদীর নাব্যতা থাকায়। নিয়মিত ফেরী চলাচল অব্যাহত ছিল সেখানে। আর সেই ফেরীর যাত্রী সহ মালামাল পরিবহন হতো রেল যোগে ভরত খালী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে বোনারপাড়া বা দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু, এ নদীটির নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় ফেরী চলাচল বন্ধ হলে ঘাটটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যাত্রীর অভাবে স্টেশনটিতে চালু থাকা তিস্তা এক্সপ্রেস, সাটল সহ সবকটি ট্রেনও বন্ধ হয়ে যায়।

স্টেশন বন্ধ থাকায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সব স্টাফদের অন্যত্রে সরে নেয়। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়ে স্টেশন ও রেলওয়ের বিভিন্ন মালামাল। ধীরে ধীরে স্থানীয় কিছু কুচক্রী মহল এর আত্মসাতের সুযোগ নেয়। প্রায় প্রতিরাতে স্টেশনটির ইয়ার্ডের পূর্ব ও পশ্চিম পাশ থেকে অল্প অল্প করে রেললাইন কেটে চুরি করা শুরু করে তারা। একসময় তা ব্যাপক আকার ধারণ করে।

স্টেশনটির বিষয়ে রেলওয়েতে চাকরিরত এক স্টাফ নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, প্রায় কয়েক কোটি টাকার রেললাইন চুরি হয়েছে ভরত খালী রেলওয়ে স্টেশন থেকে। রেললাইন চুরির মূল কারণ হিসেবে লিটন মন্ডল নামে এক স্থানীয় জানান, নেশা ও জুয়ার টাকা জোগাতে স্টেশন প্রাঙ্গণে চোরের সৃষ্টি হয়েছে যা রীতিমতো ভয়াবহ। দিন পেরিয়ে রাত নামলেই চোরেদের আনাগোনা শুরু হয়। চুরিকর্মে বাধা দিলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি আসে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হলে কিছুদিন পরে তিন চার জন পাহাড়াদার নিযুক্ত হয়। এতে কিছুটা চুরি বন্ধ হয়েছে। তবে মাদকের ছয়লাভ এখনো রয়েই গেছে।

জানা যায়, স্টেশনটিকে মাদকমুক্ত করতে স্থানীয়রা বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে বারবার ছাড় পেয়েছে অপরাধীরা। এ বিষয়ে সাঘাটা থানা সূত্রে জানা যায়, স্টেশনটির আনাচে-কানাচে বিভিন্ন সময়ের মাদক, চোরা কারবারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের ফিরিস্তি থানায় রয়েছে।

সচেতন মহলের দাবি, পুলিশ প্রশাসনের নিবিড় পর্যবেক্ষণ আর নিরলস তদন্ত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছার আগেই স্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে অপরাধ নির্মূল করা যাবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular