মোঃ মাহাবুবুর রহমান কালীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার ২নং জামাল ইউনিয়ন এবং ৩নং কোলা ইউনিয়নকে বিভক্ত করেছে বেগবতী নদী। আর এই নদীটিতে থাকা সেতু দুই ইউনিয়নের জনগণকে একীভূত করেছে। বর্তমানে এই নদীর উপর পুরাতন সেতুটি ভেঙে ফেলে উইকেয়ার প্রকল্পের অধীনে নতুন একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
যে কারণে সাময়িকভাবে চলাচলের জন্য সেতুটির নির্মাণ স্থল থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংযোগ সড়কের সেতুটি তৈরি করায় এ পর্যন্ত বারংবার তা ভেঙে যায়। কাঠের ওই সেতুটিতে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে থাকার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে। জামাল ও কোলা ইউনিয়নের নারী-পুরুষ, বয়স্ক মানুষ, রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে দারুণ ভোগান্তিতে পড়লেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং উপজেলার এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি একেবারে গুরুত্বহীন মনে করে দায়সারা ভাবে চলছে। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার বাসিন্দা কাঠের এই ভাঙ্গা সেতুটি পার হয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্য যেতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, দুই ইউনিয়নের সংযোগ স্থাপনকারী সেতুটি নির্মাণের শুরু থেকে কাঠের যে সংযোগ সড়কটি করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্বল। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার তা ভেঙ্গেও গেছে। ঠিকাদারের লোকজন কিংবা এলজিইডির দায়িত্বশীলদের বারবার বললেও তারা তা আমলে নিতে চান না। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ যেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করেছে। সেতুটি দিয়ে প্রতিনিয়ত গ্রামীণ সড়কে চলাচলকারী অনেক গাড়ি ও লোকজন চলাচল করায় কাঠ দিয়ে সংস্কার করলে তা বেশিদিন টিকে না। ফলে কাঠের এই সংযোগ সেতুটি নিয়ে এই জনপদের লোকজন ভোগান্তির যেনো শেষ নেই। সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, ভাঙা কাঠের ওই সেতু দিয়ে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি,বাইসাইকেল, মোটরসাইকেলসহ নানা ধরনের গ্রামীন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। এছাড়াও ভারী যানবাহন কিংবা কৃষি পণ্য বোঝাই গাড়ি নিয়ে চলাচল না করতে পারায় অনেকেই দুর্ভোগে পড়ছেন। জামাল ইউনিয়নের তালিয়ান গ্রামের বারেক আলী বলেন, অত্র অঞ্চলে কোলাবাজার একটি নামকরা বাজার। এই বাজার কেন্দ্রিক দুই ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার লোকজনের সমাগম ঘটে। বিশেষ করে জামাল এবং কোলা ইউনিয়নের লোকের যাতায়াতের অন্যতম একটি মাধ্যম এই সেতুটি। এই এলাকার ছেলে মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একজন অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য কালীগঞ্জ শহরে নেওয়াও খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত কাঠের এই সেতুটি মজবুত করে নির্মাণ করা হলে মানুষের ভোগান্তি কমবে।
ইজিবাইক চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ইজিবাইক পারাপার করতে হয়। এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে যেতে এই সেতুটি সকলকে ব্যবহার করতে হয়। কিছুদিন আগে এই সেতু দিয়ে একটি ইজিবাইক পার হতে যেয়ে উল্টে যায়। এজন্য ভয়ে আমরা গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে তারপর গাড়ি পার করি। এই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জামাল এবং কোলা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী বেগবতী নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি “শামীম এন্টারপ্রাইজ এবং মোঃ মিজানুর রহমান” নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে নির্মিত হচ্ছে। উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আব্দুল খালেক জানান, সংযোগ সড়ক স্থাপনের বাজেট খুব কম। তবুও আমরা কাঠের সেতুটি ভালোভাবে করার চেষ্টা করেছি। শুনেছি সেতুটি ভেঙ্গে গেছে।
এ কারণে সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ১২ ফুট লম্বা সাইজ কাঠের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আগামীকাল সেতুটি সম্পূর্ণরূপে সংস্কার করে দেওয়া যাবে। কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আহসান হাবীরের সঙ্গে কাঠের সংযোগ সেতুর বিষয়ে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেতুটির ব্যাপারে কোনো তথ্য আমি আপনাকে দিতে পারবো না। তবে সেখানে কি ঘটেছে আমি তা খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।