Monday, January 13, 2025
Homeঅপরাধফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রভাবে জিরো থেকে হিরো মমিন

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রভাবে জিরো থেকে হিরো মমিন

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ছাত্র জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে অর্থ যোগান দিতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নরসিংদীর চরাঞ্চলে ত্রাসের রাজ্যত্ব কায়েম করেছিলেন একাধিক হত্যা মামলার আসামী যুবলীগ নেতা মমিন। শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্ষান্ত হননি। অভিযোগ আছে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করতে নরসিংদীতে অর্থ যোগান দাতাদের মধ্যে অন্যতম একজন এই মমিন। নানা রকমের অপরাধ করার পরও যুবলীগেরে এই নেতা এখনো পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। তার বিরুদ্ধে ৬ মামলা থাকার পরও এখনো কেন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছেন না প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

নাম প্রকাশে এলাকাবাসীর মমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানান, আওয়ামী লীগের আমলে এই মমিন এমন কোনো জঘন্য কাজ নেই যা করেনি। তৎকালীন সরকারের আমলে শিল্পমন্ত্রী, নরসিংদী জেলা সদরে সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের সাথে নানান ভাবে সখ্যতায় ভাগিয়ে নেন জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতির পদ। এর পর থেকেই মমিন শুরু করেন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম। ধারাবাহিক ভাবে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের আমলে দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতার দম্ভে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তিনি।জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই-আগষ্ট এ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল আন্দোলন শিক্ষার্থীদের বিরোদ্ধে ।

ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালানোর জন্য সে দু হাতে টাকা ছিটিয়েছেন । ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে প্রতিহত করতে তার ভাই ভাই বাহিনীকে অর্থযোগান দিয়েছিলেন স্থানীদের এমন অভিযোগ। যার ফলশ্রুতিতে মমিনের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টাসহ নানা অপরাধ কর্মের ঘটনায় নরসিংদীতে অর্ধডজনের উপরে মামলা দায়ের রয়েছে। যাহা মামলা নং ১২(৮)২৪ ধারা: ৩২/১৪৯/১১৪/৩৪ দ:বি:, মামলা নং ৯ (৯)২৪ ধারা:১১৪/১৪৯/১০৯/৩২৬/৩০৭/১৪৩/৩৪, মামলা নং ১৩(৯)২৪ ধারা ১৪৩/১০৯/১১৪/৩০৭/৩২৬/৩৪, মামলা নং ১৫(৯)২৪ ধারা: ১৪৩/১৪৯/৩২৩/৩০২/৩০৭/১০৯/১১৪/৩৪ দ:বি:, মামলা নং ১৮(৯)২৪ ধারা: ১৪৩/১৪৯/১১৪/৩০৭/৩২৬/৩৪ সহবিস্ফোরক ও মামলা নং ১৪(৯)২৪ ধারা ১৪৩/১৪৯/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ তাসহ বিস্ফোরক।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগষ্ট যখন বিপ্লব ঘটে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তখন থেকে তার ভোল পাল্টাতে থাকে। নতুন বাংলাদেশে অন্তবর্তীকালীন সরকার যখন গঠিত হয়, তখন এ মমিন তার রূপপরিবর্তন করে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পুরানো একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোষ্ট করে নিজকে বর্তমান সরকারের লোক বলে প্রচার করেন। সরেজমিনে চরাঞ্চলের করিমপুর ও রসুলপুর গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, যুবলীগ নেতা এ মমিন রসুলপুর গ্রামে ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ হিসাবে রেকর্ডকৃত প্রায় ৫০ শতাংশ ও পতিত জমিসহ প্রায় ৯০ শতাংশ জমি দখল করে নিজ নামে মার্কেট তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসী ২০২৪ সালে ২১ জানুয়ারী সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলেও মনিনের দাপটের প্রেক্ষিতে কোন প্রতিকার পাইনি। যা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলের পূর্বে মমিনের বসত ভিটা ছাড়া কিছুই ছিল না। যখনই নরসিংদী জেলা পরিষদের চেয়াম্যান ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূইয়ার সান্নিধ্যে জেলা যুবলীগের পদ পান,এরপর থেকে শুরু হয় তার উত্থান। ক্ষমতার দাপটে অবৈধ ভাবে আয়ের টাকা দিয়ে গড়ে তুলেন শিল্প কারখানা। শিল্পমন্ত্রীর সহায়তায় এ শিল্পকারখানার টেক্স ফাঁকি দিয়ে নিয়মবহিভূত ভাবে রাতা-রাতিতে কোটি পতি বনে যায়। যে কারনে তার মালিকানায় ৪টি প্রতিষ্ঠানের নামে রাজস্ব ফাকির মামলা চলমান। এ মমিন জেলা যুবলীগের নেতা হওয়ার সুবাদে মন্ত্রী ও এমপিদের নাম ভাঙ্গীয়ে ক্ষমতায় দেখিয়ে বিভিন্ন তদবীর ও চাঁদাবাজি ছিল তার মূল ব্যবসা। নরসিংদীর চরঞ্চালের বিল্লাল, শুকুর আলী,মিষ্টার ও ছালাম নামে ব্যক্তিরদের কাছ থেকে জোর পূর্বক নিয়মিত চাঁদা নিতেন তিনি। বর্তমানে সাহেপ্রতাব রয়েছে ৩৫/৪০ বিঘা জমির উপর তার শতাকোটি টাকার মিল কারখানা। তার অবধৈ টাকা ও ক্ষমতার বলে সে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ ৭/৮টি মামলা থাকার সত্যেও বীরদর্পে প্রকাশে দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন এ মমিন। এ ব্যপারে অভিযোক্ত যুবলীগ নেতা মমিনের সাথে মোবাইলে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলা ও পত্রিকায় নিউজ করে কোন লাভ নেই, আপনার যা খুশি লিখতে পারেন, আমার কোন সমস্যা নেই। নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, তাকে গ্রেফতার আমাদের অভিযান চলছে, সে পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না, তবে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে শীঘ্রই আমরা তাকে গ্রেফতার করতে পারবো।

RELATED ARTICLES

Most Popular