সুব্রত চন্দ্র দাসঃ
দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিঃ এর ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা ৪ জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রোজ শনিবার, ঢাকার তেজগাঁওতে বটমলী হোম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অত্র হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান মি. আগষ্টিন পিউরীফিকেশন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ, ও.এম.আই। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মি. নির্মল রোজারিও, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন; মি. পংকজ গিলবার্ট কস্তা, চেয়ারম্যান, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাক্কো) লিঃ; মি. হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, প্রেসিডেন্ট, দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ ঢাকা; মি. বাবু মার্কুস গমেজ, এক্সিকিউটিভ মেম্বার, ওয়ার্ল্ড এ্যালায়েন্স অব ওয়াইএমসিএ; মি. আলবার্ট সুরেন মন্ডল, প্রেসিডেন্ট, ঢাকা খ্রীষ্টিয়ান বহুমূখী সমবায় সমিতি লিঃ। এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের সমবায় অঙ্গনে বিভিন্ন খ্রিষ্টান সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ, উপদেষ্টাবৃন্দ ও দশ শতাধিক সদস্য সদস্যা।
৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সভার সভাপতি ও সোসাইটির চেয়ারম্যান মি. আগষ্টিন পিউরীফিকেশন তার স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সোসাইটির অর্থবছরের কার্যক্রম ও উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন। হাউজিং সোসাইটির গঠন প্রক্রিয়ায় খ্রিস্টমন্ডলীর পক্ষ থেকে অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে যিনি পাশে এসে দাঁডান তিনি হলেন প্রয়াত পরম শ্রদ্ধেয় আর্চবিশপ মাইকেল রোজারিও, ডিডি। আর ব্যক্তি পর্যায়ে এই পথের পথিকৃৎ হলেন স্বর্গীয় ডানিয়েল কোড়াইয়া। তাঁর সাথে ছিলেন মি. আলেকজান্ডার রোজারিও সহ আরও কয়েকজন সমবায়ী ব্যক্তিত্ব। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে ১৪ এপ্রিল জন্ম লাভ করে “দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিঃ।খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ভুক্ত সদস্যদের উদ্দেশ্যে বাসোপযোগী পরিবেশে বিক্রয়যোগ্য জমি/ফ্ল্যাট/গৃহনির্মাণ করে সোসাইটির পরিকল্পনা অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনকৃত বাসস্থান প্রস্তুত করে সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করার লক্ষ্যে ‘আমরা গৃহ সমস্যা সমাধানে অঙ্গীকারাবদ্ধ শ্লোগান নিয়ে ঢাকা বিভাগের মধ্যে সোসাইটির কর্ম এলাকা নির্ধারিত হয়। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর বর্তমানে সোসাইটির আর্থিক বুনিয়াদ সুদৃঢ় হয়ে মোট সম্পদ-পরিসম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে সোসাইটির ৮৬টি প্লট প্রকল্পে মোট প্লটের সংখ্যা ৪,৮৫৫টি এবং জমির পরিমাণ পরিমাণ ৩৬৫৩৬.৫২ শতাংশ বা প্রায় ১১০০ বিঘা। বর্তমানে ফ্ল্যাট প্রকল্পের সংখ্যা ২০৫টি এবং ফ্ল্যাটের সংখ্যা ২,১০৪টিতে উন্নীত হয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি ফ্ল্যাট বিল্ডিং বাস্তবায়ন শেষে ৪২৬টি পরিবার বসবাসের সুযোগ পাচ্ছেন এবং আরও ১৩টি ফ্ল্যাট বিল্ডিং নির্মাণাধীন যেখানে আরও প্রায় ১৫০টি পরিবার বসবাসের সুযোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। সোসাইটিতে শেয়ার, সঞ্চয়, ফ্ল্যাট ও প্লট প্রকল্প, দীর্ঘ মেয়াদী আমানত, স্বল্প মেয়াদী আমানত, শর্ট-টার্ম এইচডিপিএস, মিলিয়নিয়ার স্কীম, হাউজিং ডিপোজিট পেনশন স্কীম প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি টেকসই ও উৎপাদনমূখী সমবায় গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা ও দক্ষতার নিদর্শনে প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরে সোসাইটিতে আয়বর্ধকমূলক সময়োপযোগী প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
সভায় জানানো হয়, হাউজিং সোসাইটি সদস্যদের জীবন-মান বিনির্মানে বছরের সকল সময়ই প্রয়োজনীয় মুহূর্তে সাধারণ ঋণ, ব্যবসায়িক ঋণ, গৃহ নির্মাণ/জমি বন্ধকী ঋণ, উচ্চ শিক্ষা ঋণ, স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ঋণ ও দুঃস্থ বিধবা নারীদের ঋণ বিতরণ করার মধ্য দিয়ে সহায়তা করেন থাকেন। ইতোমধ্যে গাজীপুরের পুবাইল ডেমরপাড়ায় নীড় রিসোর্ট এÐ রেস্টুরেন্ট, ঢাকার পূর্বাচল শহর সংলগ্ন মঠবাড়িতে শান্তির নীড় প্রবীণ নিবাস ও গেস্ট হাউজ ও গাজীপুরের কালিগঞ্জ দড়িপাড়ায় নীড় থীমপার্ক এন্ড রেস্টুরেন্ট, সাভার রাজাসনে সেন্ট ফিলোমিনা মা-শিশু এন্ড জেনারেল হাসপাতাল ও ফার্মগেইটে নীড় ছাত্রীবাস বাস্তবে রূপ নিয়েছে। হাউজিং সোসাইটির বর্তমান বোর্ডের যুগান্তকারী এ সকল প্রকল্পগুলোর সঙ্গে অচিরেই সংযোজিত হচ্ছে আরও কয়েকটি প্রকল্প। প্রকল্পগুলো বর্তমান বাস্তবতায় যুগপোযোগী ও চাহিদাসম্পন্ন থাকায় সোসাইটির উন্নয়ন অগ্রযাত্রা পৌঁছে যাবে অনন্য মাইলফলকে। নতুন পরিকল্পনায় বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধানী প্রকল্পগুলো হলো- নীড় ওয়াটার প্ল্যান্ট. নীড় এলপিজি ফিলিং স্টেশন, অটো-ব্রিকস, থ্রী-স্টার হোটেল ও কনভেনশন সেন্টার। প্রকল্পগুলো বর্তমান বাস্তবতায় যুগোপযোগী ও চাহিদাসম্পন্ন থাকায় সোসাইটির তথা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা পৌঁছে যাবে অনন্য মাইলফলকে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা।